ফিস্টুলা করার সঠিক সময়, পরিচর্যা, ম্যাচুরেশন, ব্যবহার করার উপযুক্ত সময় এবং আনুষঙ্গিক দিকনির্দেশনা এবং প্রাসঙ্গিক জটিলতা।

post-image

ফিস্টুলা করার সঠিক সময়, পরিচর্যা, ম্যাচুরেশন, ব্যবহার করার উপযুক্ত সময় এবং আনুষঙ্গিক দিকনির্দেশনা এবং প্রাসঙ্গিক জটিলতা।

যেকোনো রোগের চিকিৎসা থেকে রোগ প্রতিরোধ করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি যুদ্ধের চেয়ে যুদ্ধের যথোপযুক্ত পরিকল্পনা করা বেশি জরুরি।

কিডনি ফেইলুর অনেক বড় রোগ এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যয়বহুল রোগ কিন্তু এটা সবাইকে মানতেই হবে কিডনি ফেইলুর রোগ ডায়াগনোসিস করা খুবই সহজ। কিডনি ফেইলুর রোগের আর একটা বড় ট্রাজেডি হলো এই রোগ শেষ পর্যায়ে ধরা পড়ে যখন দুটো কিডনিই পুরোপুরি অকার্যকর অবস্থায় ধরা পড়ে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটাই এই রোগের ধরন। যেহেতু সহজে ডায়াগনোসিস করা যায় শুধুমাত্র এই কারণেই কিডনি ফেইলুর রোগীগুলো আমাদের সম্মানিত নেফ্রোলজিস্টগন সঠিক ডায়াগনোসিস করার পরও সন্দেহ প্রকাশ করেন। কারণ এই রোগীগুলো মনে করে যে, তাদের দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে গেল অথচ তারা টেরও পেল না?? চিকিৎসক নিশ্চয়ই ভুল করছেন?? অথচ এ রোগীদের এটিই হল প্রথম এবং প্রধান ভুল যা তাদের ভবিষ্যৎ চিকিৎসা পরিকল্পনায় বিশাল খাদ তৈরি করে। শুধুমাত্র এই সন্দেহ প্রকাশ করার জন্যই কিডনি ফেইলুর রোগীগুলো দুর্গতির চক্রাকারে পতিত হন এবং বিদেশে যেয়ে টাকা পয়সা নষ্ট করে আসেন। শুধুমাত্র তাদের এবং পরিবারের মনের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অনেক দালাল চক্র এই সমস্ত কিডনি রোগীদের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে অর্থনৈতিকভাবে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত করেন যখন তারা আসল চিকিৎসা শুরু করার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক দৈন্যতায় পড়ে যান।

অথচ শুরু থেকেই নেফ্রোলজিস্টের উপদেশমতো তার চিকিৎসার ব্যাপারে পরিকল্পিত পরিকল্পনা করা শুরু করলে রোগীগুলোকে খুব সহজে হ্যান্ডেল করা যায় এবং খুব কম টাকার ভিতরে হ্যান্ডেল করা যেত।

তাই কিডনি ফেইলুর রোগীদের চিকিৎসা তখনই খুব সহজ হবে যখন তার চিকিৎসা পরিকল্পনা যত গোছানো হবে এবং যত দ্রুত হবে।

মনে রাখতে হবে উপযুক্ত চিকিৎসা পরিকল্পনা একবার, তা না হলে ভোগান্তি বারবার।

💥 Serum Creatinine যখন ৫ অথবা ৬ লেভেলে উঠে তখনই কিডনি ফেইলুর রুগীদের হাতের ফিস্টুলা বিশেষ করে ফোরআর্ম ফিস্টুলা করে রাখা অবশ্যই উচিৎ যা তাকে সারা জীবন বেনিফিট দিবে।

💥 এটা অবশ্যই বুঝতে হবে যে ফিস্টুলা করা মানেই ডায়ালাইসিস শুরু করা নয় অথচ এটাই ডায়ালাইসিস করার জন্য পরবর্তীতে সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা।

💥একটা ফিস্টুলা থেকে সর্বোচ্চ বেনিফিট পেতে চাইলে এটা এনসিওর করতে হবে যে, ফোরআর্ম ফিস্টুলা টা যাতে সর্বোচ্চ গুণগত মানের হয়। ফোরআর্ম ফিস্টুলা সাধারণত বাম হাত অথবা ডান হাত যে হাতেই হোক তবুও ভালো কিন্তু অবশ্যই এলবো বা ব্র্যাকিয়াল ফিস্টুলা এভয়েড করা উচিত তা যত বড় জায়গা থেকেই অফার করা হোক।

💥ফিস্টুলা করার পরবর্তী এক মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই সময়টা হল হিলিং টাইম। কিন্তু ফিস্টুলার অপারেশন পরবর্তী জটিলতা গুলোও এই সময়ের ভিতরেই হয় যার মধ্য খুবই বড় জটিলতা হল ফিস্টুলা ফুলে যাওয়া বা এনিউরিজম। তাই ফিস্টুলা করার পর যাতে হিলিং ভালো হয়, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, ব্যান্ডেজ যাতে না ভিজে যায় এবং কাটা জায়গায় যাতে কোন ইনফেকশন না হয় সে ব্যাপারগুলো দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

💥ফিস্টুলা করার তিন চার দিন পরেই হাতে রাবারের বল দিয়ে ব্যায়াম শুরু করতে হয়। কিন্তু একটা ফিস্টুলার সর্বোচ্চ গুণগত মান উপযুক্ত অপারেশনের উপরেই ডিপেন্ড করে যে রক্তের প্রবাহের প্রেসারটা রোগীর ধমনী থেকেই আসে। তাই যে রোগীর ধমনীর প্রেসার যত বেশি হবে এবং যে রোগীর শিরা গুলো যত ফ্রেশ হবে তার ফিস্টুলা ততো তাড়াতাড়ি রেডি হবে।

💥আর একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো যখনই কিডনি ফেইলুর ধরা পড়বে তখনই রোগীদের এটা নিজ থেকেই এনসিউর করতে হবে যে, যে হাতে সে কম কাজ করে অর্থাৎ নন ডমিনেন্ট হ্যান্ড এ কোন ধরনের ইনজেকশন স্যালাইন দেওয়া যাবে না অর্থাৎ ওই হাত ফিস্টুলার জন্য প্রিজার্ভ করতে হবে যাতে ওই হাতের রক্তনালী গুলো ফ্রেশ থাকে।

💥আলটিমেটলি মূল কথা হল ফিস্টুলাতে যত বেশি সময় দেওয়া যাবে সেই ফিস্টুলা তত বেশি রেডি হবে আর যত বেশি রেডি হবে ততো বেশি এর স্থায়িত্ব বাড়বে।

💥এইজন্যই উন্নত দেশে ফিস্টুলা রেডি হওয়ার জন্য যাতে বেশি সময় পাওয়া যায় সেজন্য পার্মানেন্ট ক্যাথেটার করে। তাই ফিস্টুলা তাড়াতাড়ি রেডি করার কোন শর্টকাট ব্যবস্থা নেই।

💥অনেকেই ফিস্টুলা দেড় দুই মাসের ভিতরেই ব্যবহার করা শুরু করেন যে ফিস্টুলা গুলো আল্টিমেটলি খুব বেশিদিন টিকে না। সেজন্য ফিস্টুলা করা না থাকলে ডায়ালাইসিসের শুরুতেই নরমাল শর্ট টার্ম ক্যাথেটার না করে প্রথমেই সরাসরি পার্মানেন্ট ক্যাথেটার করা উচিত।

💥যে ফিস্টুলা রেডি হতে ৬ মাস সময় পাবে আর যে ফিস্টুলা দুই মাসেই ব্যবহার করা শুরু হবে অবশ্যই তাদের গুণগত মানের পার্থক্য থাকবে। যদি সব ফিস্টুলা দেড় দুই মাস তিন মাসেই রেডি হয়ে যেত তাহলে উন্নত বিশ্বে পার্মানেন্ট ক্যাথেটার আবিষ্কার হতো না যা ফিস্টুলা রেডি হওয়ার জন্য বেশি সময়ের ব্যাকআপ দিতে সর্বোচ্চ বিকল্প ব্যবস্থা।

খেয়াল করে দেখবেন উন্নতদেশ অথবা মিডিলিস্ট থেকে যে কিডনি ফেইলুর রোগীরা ফেরত আসেন তারা কিন্তু পার্মানেন্ট ক্যাথেটার নিয়েই আসেন।

💥 বাংলাদেশের কিডনি ফেইলুর রোগীগুলো যাতে উন্নত বিশ্বের সর্বাধুনিক এই সার্ভিসটা দেশে পেতে পারে সেজন্যই ২০০৮ সালে বাংলাদেশে আমি সর্বপ্রথম পার্মানেন্ট ক্যাথেটার ইমপ্লান্টেশন শুরু করি এবং আমার পেশাগত প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় দেশের সংশ্লিষ্ট সম্মানিত নেফ্রোলজিস্টগন বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই রোগীদের এই সার্ভিসটা বর্তমানে দিতে পারছেন।

কিন্তু বড়ই দুর্ভাগ্যজনক যে আমাদের দেশের অধিকাংশই কিডনি রোগীরা সময় মত ফিস্টুলা করে রাখেন না, সম্মানিত নেফ্রোলজিস্টগন সাজেস্ট করার পরও।

ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে তাদের ক্যাথেটার, ফিস্টুলা সবই করতে হয় এবং বার বার করতে হয়। সেজন্যই রোগীরা পরবর্তীতে ভালো চিকিৎসার পরও খরচ অনেক বেশি হয় এবং তাদের কোয়ালিটি লাইফ ভালো থাকে না।

💥 তাই কিডনি ফেইলুর রোগীদের চিকিৎসা খরচ বাঁচানোর একমাত্র এবং একমাত্র রাস্তাই হল যে, ডায়ালাইসিস করার জন্য ডায়ালাইসিস লাইনগুলো বা ভাস্কুলার এক্সেস আগেই করে রাখা, মন শক্ত করে সমস্ত প্রিপারেশন আগেই নিয়ে রাখা এবং নেফ্রোলজিস্টগনের উপদেশ মত চলা।

সবার জন্য শুভকামনা।

Official Contact Address- Dr Mohammad Shafiul Azam Vascular Access Surgeon Department of Urology National Institute of Kidney Diseases and Urology(NIKDU) Sher E Bangla Nagar Dhaka Bangladesh

ডায়ালাইসিসের সর্বাধুনিক সব ধরনের ভাস্কুলার এক্সেস গুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চাইলে আমার প্রফেশনাল পেজটাও দেখতে পারেন।

My Facebook Professional Pages link https://www.facebook.com/drshafiulazam/

ⒸBKPA.

Caution:

BKPA is a voluntary social organization whose mission is to raise awareness, promote and share knowledge about kidney disease. BKPA does not provide any kind of medical advice directly or indirectly through social media or any other platform which should only be done by the nephrologist or registered doctor. This is prohibited to take any kind of medical treatment based on the information provided by BKPA.

সতর্কতাঃ

বিকেপিএ একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন যার লক্ষ্য কিডনি রোগ সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি,প্রচার এবং সতর্ক করা। বিকেপিএতে সামাজিক মাধ্যম অথবা অন্য কোন মাধ্যম ব্যবহার করে বা সরাসরি প্রত্যক্ষ / পরোক্ষভাবে কোনো প্রকার চিকিৎসা সংক্রান্ত সেবা বা পরামর্শ প্রদান করা হয় না যা শুধুমাত্র আপনার নেফ্রোলজিস্ট এবং রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের এখতিয়ার।বিকেপিএ প্রদত্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোন প্রকার চিকিৎসা গ্রহণ নিষিদ্ধ।